BANGLADESH NAVY DOCKYARD & ENGINEERING WORKS HIGH SCHOOL
বাংলাদেশ নৌবাহিনী ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস উচ্চ বিদ্যালয় (বিএনডিইডব্লিউএইচএস) ডকইয়ার্ড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিঃ এর অভ্যন্তরে ১.৫০ একর (প্রায়) জায়গার উপর অবস্থিত একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৬৬ সালে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে যাত্রা শুরু করে।
ডকইর্য়াড এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়র্কস লি: (ডিইডব্লিউ লিঃ), এ কর্মরত সর্বস্তরের কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং অত্র এলাকার ছেলেমেয়েদের লেখপড়া নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল সংস্থার (বিএসইসি) অধীনে বিএসইসি ডকইয়ার্ড উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। শুরু থেকেই বিদ্যালয়ের সমস্ত ব্যয়বার ডিইডব্লিউ লি. নারায়ণগঞ্জ বহন করে। ডিইডব্লিউ লি: এর ক্যাম্পাসের মধ্যে নদীর পাশে মনোরম পরিবেশে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। জন্মলগ্ন থেকে এটি প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে আত্মপ্রকাশ করলে ও পরবর্তীকালে উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। ২০০২ সালের ৩১ ডিসেম্বর সরকার কর্তৃক ডিইডব্লিউ লিঃ পে অফ ঘোষিত হবার পর বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি বন্ধ হয়ে যায় এবং স্কুল সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে। কিছুদিন পর শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক জেলঅ প্রশাসকের তত্ত¡বধানে (স্থানীয় প্রতিনিধি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা) বিদ্যালয়টি পুনরায় চালু হয়। বেতন বন্ধ থাকায় কর্মরত শিক্ষকগণের অধিকাংশই স্কুল ছেড়ে চলে যান। স্থানীয় কিছু উদ্দমী ব্যক্তিবর্গের প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টির শিক্ষাকার্যক্রম চলমান থাকে। এক্ষেত্রে বিদ্যালয়ের কিছু প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী বিনা পারিশ্রমিকে শিক্ষক হিসেবে শিক্ষাদান করেন। মিসেস আকলিমা খাতুন, মিসেস মনোয়ারা বেগম এবং জনাব নাসির উদ্দিন ০১/০১/২০০৩ হতে ০৩/০১/২০১০ পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৮ এপ্রিল ২০০১ সাল হতে অদ্যবধি জনাব মোহাম্মদ আলী যথাক্রমে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক, প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এবং স্কুলের দুঃসময়ে অক্লান্ত পরিশ্রম করে স্কুলটিকে আজকের পর্যায়ে উন্নীত করতে যথেষ্ঠ অবদান রেখেছেন।
২০০৬ সালে ০৭ ডিসেম্বর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক ডিইডব্লিউ লিঃ এর পরিচালনার ভার বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিকট হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় ডিইডবিøউ লিঃ বাংলাদেশ নৌবাহিনী, নারায়ণগঞ্জ, বিদ্যালয়টির পরিচালনার ভার গ্রহণ করতে পারেনি। অবশেষে ২০১০ সালের ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ নৌবাহিনী বিদ্যালয়ের পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহন করে।
বর্তমানে নির্মাণ শৈলীতে বিদ্যালয়টি অনন্য রূপ ধারণ করেছে। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর প্রচেষ্টায় ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক বিদ্যারয় ভবন (৮ তলা ভীতসহ ৫ তলা) নির্মিত হয়েছে। পরবর্তীকালে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রতিষ্ঠানটির নাম রাখা হয় ‘বিএন ডিইডব্লিউ উচ্চ বিদ্যালয়’।
বর্তমানে সভাপতি হিসেবে ডিইডব্লিউ লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমডোর খন্দকার আক্তার হোসেন, (ই), এনইউপি, পিএসসি, বিএন এবং নির্বাহী সদস্য হিসেবে কমান্ডার এম নাজমুল ইসলাম, (সি), পিএসসি, বিএন দায়িত্ব পালন করছেন। তাদের নিবিড় তত্ত¡ধানে শিক্ষকগণের দক্ষতা বৃদ্ধিতে শিক্ষক প্রশিক্ষণ শিক্ষার্থীদের জন্য স্কাউট, খেলাধুলা, সঙ্গীত, নৃত্য, কবিতা, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ প্রভৃতি প্রচলন করা হয়েছে। ফলে পিইসি, জেএসসি এসএসসি পর্যায়ের অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্তরে পাবলিক পরীক্ষায় জিপিএ-৫ সহ মেধাবৃত্তি, স্কাউটে সহপাঠক্রমিক কার্যাবলিতে পুরস্কার এবং জাতীয় দিবসগুলোতে কুচকাওয়াজে নিয়মিতভাবে অ্যাওয়ার্ড অর্জন করছে। অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ নৈতিক মূল্যবোধ সম্পন্ন সুনাগরিক তৈরিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। বর্তমানে বিদ্যালয়টি বন্দর উপজেলায় অন্যতম সেরা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে।
শিক্ষার লক্ষ্য হলো শিশুর সার্বিক বিকাশ ঘটিয়ে যুগোপযোগী সুনাগরিক রূপে গড়ে তোলা। শিক্ষার অন্যতম লক্ষ্য হলো- শিশুদের বিকাশকে কার্যকরী ও ত্বরান্বিত করেতাদের পূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা। ফলে তারা তাদের চারপাশের পরিবেশের সঙ্গে উন্নততর ওসার্থক সংগতি বিধান ও অভিযোজন করতে পারে। যেকোন প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনের উদ্দেশ্য হলো প্রতিষ্ঠানটির লক্ষ্য অর্জনের অনুকূলে এর সকল সদস্য ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রচেষ্ঠার সমন্বয় সাধন করা। বিদ্যালয় প্রশাসনের মূল উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের দৈহিক, মানসিক, নৈতিক ও আত্মিক বিকাশের সুযোগ নিশ্চিত করা। এই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য আমরা নিরলস কাজ করে যাচ্ছি। অচিরেই বিদ্যালয়টি কলেজে উন্নীত করার প্রচেষ্টা রয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক মন্ডলী, অভিভাবকবৃন্দ, শিক্ষার্থীগণ ও বিদ্যালয়ের অংশীজনের আন্তরিক প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টি নারায়ণগঞ্জ তথা বাংলাদেশের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ পরিণত হবে।